ক্যান্সার লড়াকুদের জীবনে ক্যান্সার এক অনিবার্য সত্য। ক্যান্সার ও জীবন একদমই দুই মেরুর দুই বাস্তবতা নয় তাঁদের জন্য। ক্যান্সারকে দমিয়ে, মাড়িয়ে জীবনের পথেই হেঁটে চলেছেন তাঁরা, জীবনের জয়ধ্বনি করছেন। ঘুরে দাঁড়িয়েছেন বা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সে চেষ্টা করতে করতেই ক্যান্সার লড়াকুগণ একত্রিত হয়েছেন। উপলব্ধি করেছেন সম্মিলিতের শক্তির ক্ষমতাকে। প্রস্তুত হয়েছেন শক্তির বলয় আরো ব্যাপৃত, বিস্তৃত করতে।
ক্যান্সার লড়াকুদের যুদ্ধের সাথি পরিচর্যাকারীগণ, যাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিবারের সদস্য। ক্যান্সারের সাথে মূল লড়াইটি আক্রান্তের হলেও সর্বস্ব বাজি রেখে আক্রান্ত মানুষটিকে সারিয়ে তুলতে বা খানিক স্বস্তি দিতে প্রাণপাত করেন যে পরিচর্যাকারীরা, তাঁদের লড়াইটা দৃশ্যমান হয় না। নিঃসঙ্গ লড়াই চালিয়ে যেতে যেতে প্রায়শই ভেঙে পড়েন আক্রান্তের প্রিয়জনেরা। ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ে জিতে যাওয়া প্রিয়জনকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া অথবা প্রিয়জনকে হারিয়ে রিক্ততার অনুভূতি নিয়ে জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাটা পরিচর্যাকারীদেরও।
যূথবদ্ধ ক্যান্সার লড়াকু এবং পরিচর্যাকারীগণ ডাক দেন অন্যদের। সাড়া মেলে। ক্যান্সার লড়াকু এবং পরিচর্যাকারীরা লেখেন তাঁদের লড়াইয়ের বৃত্তান্ত। লড়াইয়ের ময়দান ফিরে দেখতে খুব অস্বস্তি হয়, মনে পড়ে হারানো স্বজন-বন্ধু-সন্তানের মুখ। তবু তাঁরা দমে যান না। থামেন না। তাঁরা আশা দিতে চান। বলতে চান, কোনো বিপর্যয়ই যেন আমাদের থামিয়ে দিতে না পারে। আমার যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারি। অন্যদের বলতে পারি, আমরা আছি, 'এখানে থেমো না'।